মালদা বইমেলায় মনোজ্ঞ আলোচনা সভা

28th January 2020 বিনোদন
মালদা বইমেলায়  মনোজ্ঞ আলোচনা সভা


 মালদার ভূমিপুত্র, চিন্তানায়ক বিনয় কুমার সরকারের নামে ফাউন্ডেশন ,সংগ্রহশালা তৈরির দাবি উঠলো। তার সমস্ত লেখা সংগ্রহ থাকবে । পাশাপাশি এবং উত্তরবঙ্গের তিনটি মহাবিদ্যালয় গৌড়বঙ্গ, রায়গঞ্জ, বালুরঘাটে, বিনয় সরকারের নামে চেয়ার প্রফেসর তৈরির দাবি উঠল মালদা জেলা বইমেলায়। বই মেলায় বিনয় সরকারের উপরে আয়োজিত একটি আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন বিশিষ্টজনেরা। সেখানে বক্তব্য রাখেন 
রায়গঞ্জ কলেজের উপাচার্য অধ্যাপক ড:অনিল ভুইমালি ও বিশিষ্ট লোক সংস্কৃতির গবেষক অবসর প্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক ড:অমল কান্তি রায় সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব।রায়গঞ্জ কলেজের উপাচার্য ডঃ অনিল ভুইমালি বিষয়টি নিয়ে ফাউন্ডেশন,সংগ্রহশালা তৈরির পাশাপাশি  রায়গঞ্জ কলেজের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে রেজুলেশন নিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে চেয়ার প্রফেসর পদ সহ বিভিন্ন দাবি জানাবেন বলে জানিয়েছেন। একই রকম দাবি তিনি বালুরঘাট ও গৌড়বঙ্গ ইউনিভার্সিটি কেউ করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া মালদার এই কৃতী ভূমিপুত্রকে কীভাবে আজকের প্রজন্মের কাছাকাছি আনা যায় তা নিয়ে সম্প্রতি মালদা বইমেলার বিকেলের ব্যালকনি মঞ্চে বিশেষ আলোচনা হয় দেশসেবক চিন্তানায়ক বিনয়কুমার সরকারকে নিয়ে । আলোচক হিসাবে ছিলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনিল ভুঁইমালি ও বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতি গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক ড. অমলকান্তি রায় ।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন এই প্রজন্মের বিনয় সরকার গবেষক গৌড় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ঋষি ঘোষ।দুই বিশিষ্ট আলোচক ড. ভুঁইমালি এবং ড. রায়ের বক্তব্য বিনয় সরকারের বিশাল ব্যক্তিত্ব,তাঁর মনন ও চর্চার বিস্তৃত ক্ষেত্র এবং তাঁকে নিয়ে কি কি কাজ হওয়া উচিৎ-এই প্রসঙ্গগুলি বারবার উঠে আসে।তাঁরা বইমেলা কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি যুগোপযোগী বিষয়কে আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। তিনি আরো জানান আমরা যেমন নেতাজিকে বিবেকানন্দের ভাবশিষ্য বলি বিনয় সরকার ও একই রকম ভাবে বিবেকানন্দের শিষ্য ছিলেন এবং বিবেকানন্দের অসমাপ্ত কাজ যেন সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই আলোচনাসভা থেকেই ড. ভুঁইমালি ঘোষণা করেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে বিনয় সরকার চেয়ার প্রফেসর পদ তৈরির প্রস্তাব তিনি ই সি তে পাশ করিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠাবেন।পাশাপাশি মঞ্চ থেকেই তিনি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ জানান সমাজতত্ত্ব বিভাগে বিনয় সরকার চেয়ার প্রফেসর পোস্ট তৈরি করার জন্য-বালুরঘাট বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হলে তার বাংলা বিভাগেও এই নামাঙ্কিত একটি চেয়ার প্রফেসর পোস্ট তৈরি করার দাবি রাখেন তিনি।ড. রায় জোর দিয়ে বলেন এই আলোচনার সার্থকতা এখানেই যে নিজভূমে বিনয় সরকারের মতো যুগপুরুষকে যেন পরবাসী হয়ে থাকতে না হয়,এই তিনটি জেলা মিলে তাঁকে স্মরণ করার এই উদ্যোগ বিনয় সরকার চর্চাকেই সম্প্রসারিত করবে।তাঁরা দুজনেই জোর দেন মালদা ও দুই দিনাজপুর মিলে বিনয় সরকার রিসার্চ ফাউন্ডেশন তৈরি করার ব্যাপারে। ড. ঋষি ঘোষের আলোচনায় উঠে আসে দেশ বিদেশের নানা প্রতিষ্ঠানে বিনয় সরকার নিয়ে সাম্প্রতিক গবেষণা ও তার নানাদিকের কথা।শ্রোতাদের মধ্য থেকে লোকসংস্কৃতিবিদ অধ্যাপিকা ড. সুস্মিতা সোম,তরুণ গবেষক শুভদীপ চক্রবর্তী,অধ্যাপিকা শম্পা চক্রবর্তী ও ড. দীপাঞ্জনা শর্মা,বিনয় সরকার ক্রোড়পত্রের কার্যনির্বাহী সম্পাদক স্বরজিৎ মিশ্র এই আলোচনার উপযোগিতা স্বীকার করে নিয়ে বইমেলা কমিটিকে ধন্যবাদ দেন।কমিটির পক্ষ থেকে অন্যতম সংগঠক সুমালা আগরওয়ালা ও গ্রন্থাগার আধিকারিক ড. প্রবোধ মাহাত বলেন,আমরা সবসময়ই চেষ্টা করি আলোচনাবাসরগুলি যেন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে-এই প্রস্তাবগুলি স্বাগত জানাই,বইমেলা থেকেই শুরু হোক বিনয় সরকারের জয়যাত্রা।আলোচনাটিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলজের ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মত।

           ছবি - দেবাশীষ পাল





Others News

ফিরে এসো অপু - আকুল প্রার্থনায় আপামর বাঙালী

ফিরে এসো অপু - আকুল প্রার্থনায় আপামর বাঙালী


                    সৌম‍্য ঋষি 

----------------------------------------

আপনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গভীর রাতে বা ভোরবেলা ফোন বাজলেই চমকে ওঠেন। আবার কারও মৃত্যু সংবাদ এল কি?  এবার কার পালা! 
রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, "আমি পরাণের সাথে খেলিব আজিকে মরণখেলা নিশীথবেলা।" তেমনই আপনার কন্ঠে -" মৃত্যু আয় তিনপাত্তি খেলি"- অমর হয়ে থাকবে। যদিও আপনি লেখেননি, তবু যেন এটা আপনার। আপনার মনের কথাগুলি যেন অনেকদিন বাদে বললেন। আপনার সাদাকালো সিনেমা দেখে যেই প্রজন্ম বড় হয়েছেন তাদের মনে সবসময় আপনাকে আর উত্তম কুমারকে নিয়ে একটা তুলনা চলত। কিন্তু তারাও আপনার অভিনয়ের, কন্ঠের ভক্ত। অথচ বিশ্ববরেণ্য পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের প্রথম পছন্দ ছিলেন আপনি।  আমরা যারা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের দিকে চলেছি এবং প্রতিনিয়ত আপনার নতুন নতুন কাজ দেখছি, তারা আপনার আকুল ভক্ত। ছোট ছোট বাজেটের ছবি, আর তাতে আপনার উপস্থিতি ছবিটিকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যায়।  আমরা অপুকে চিনি, ফেলুদাকে চিনি, জীবনে কি পাব না গানের সাথে নৃত্যরত সেই অভিনেতাকে যেমন চিনি, তেমন চিনি সেই অগ্রদানী ব্রাহ্মণকে - যার অসহায়তা চোখের জল ধরে রাখতে দেয় না - আবার কুন্তল কেও চিনি, পোস্তর দাদুকে চিনি, বেলাশেষের সেই বৃদ্ধকে চিনি, ধর্ষিতা নাতনির হয়ে বদলা নেওয়া ইঞ্জিনিয়ার  দাদুকে চিনি। পর্দায় আপনার সৌম্যদর্শন চেহারা, বিরামহীন এই কর্মজীবন শুধু আমাদের নয়, আমাদের পরের প্রজন্মকেও আপনার ডাই হার্ট ফ্যান করে তুলেছে। আজ মৃত্যু আপনার কাছে একটি আবশ্যিক ঘটনার মতো। রেখাপাত করার মতো নয়।  কারণ আপনি লিজেন্ড।  আমরা আপনাকে চিনি আপনার কাজ দিয়ে। যা আপনাকে চিরজীবী করবে। ব্যাক্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কেমন থাকেন, তাঁর নিজস্ব দুঃখ সুখ,তাঁর জীবনটা কি আমাদের মতোই সাধারণ না রূপকথার মতো - জানি না কিছুই। আপনি এই অসাধ্যসাধনটি করতে পেরেছেন। আমরা ঋদ্ধ হয়েছি আপনার কাজে। প্রণম্য আপনি। সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন। না হয় আপাতত কাজ নাই করলেন। তবু জানব আছেন। আর যদি মৃত্যু আপনাকে ডেকে নেয়, তার কারণ অন্য হোক। করোনায় মরণ আপনার জন্য কাম্য না। কক্ষোনো না কক্ষোনো না ----

ছবি : সংগৃহিত